পেকুয়ায় ছুরিকাঘাতে শ্রমিকদল নেতা শওকত নিহত

 প্রতিনিধি

আপডেট: ২০২৪-০৮-২৭



পেকুয়ায় ছুরিকাঘাতে শ্রমিকদল নেতা শওকত নিহত

কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম শওকত (৩৮) নিহত হয়েছেন। এসময় তাঁর ভাই মোহাম্মদ শাকের (২৭) ও চাচাতো ভাই মোহাম্মদ তারেক (২৩) আহত হন। আহতদের পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। নিহত শহিদুল ইসলাম শওকত সদর ইউনিয়নের ভোলাইয়াঘোনা এলাকার মৃত শফিউল আলমের ছেলে।
সোমবার (২৬আগস্ট) রাত ১০টার দিকে পেকুয়া বাজারের পশ্চিম পাশে ওয়াপদা অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, পেকুয়া সদর পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন পশ্চিম জোন শ্রমিকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, অপর গ্রুপের নেতৃত্ব দেন সাবেক সহসভাপতি বদিউল আলম। দুই গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ ওসমান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকদলের ৬/৭ জন নেতা জানান, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে শ্রমিক দলের দুই গ্রুপই পেকুয়া সিএনজি, টেম্পু, অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের কাউন্টার দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। এর জেরে ও দলীয় কোন্দলের কারণে ছুরিকাঘাতের ঘটনাটি ঘটেছে।
শ্রমিকদলের নেতারা আরও বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে গত রোববার রাতে শহিদুল ইসলাম শওকত এবং বদি আলমের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও পেকুয়া সদর ইউপি'র চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহ পর্যন্ত গড়ায়। তিনি গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে দুইপক্ষকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে বিরোধ মিমাংসা করে দেন এবং বিশৃঙ্খলা করলে দল থেকে বহিস্কারের হুমকি দেন। এরপর রাত আটটার দিকে ভোলাইয়াঘোনা রাস্তার মাথায় সাজ্জাদুল ইসলামের এক চাচাতো ভাইকে মারধর করেন শওকত ও তাঁর ভাই শাকের। এই ঘটনার জের ধরে সাজ্জাদ ও বদি আলমের লোকজন দলবদ্ধ হয়ে শওকত, সাকের ও তারেকের ওপর আক্রমণ করে।  এতে তিনজনই ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন ও আত্মীয়-স্বজনেরা আহতদের উদ্ধার করে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় শওকতকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালের কাছাকাছি পৌঁছালে শওকত মারা যায়।
শওকতের পরিবার জানান, লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পেকুয়ায় আনা হবে।
জানতে চাইলে পেকুয়া উপজেলা শ্রমিকদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হারুনুর রশিদ বলেন, হতাহত ও হামলাকারী-সবার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। এখানে শ্রমিক সংগঠনের কোনো বিষয় সম্পৃক্ত নেই। আমার সঙ্গে যে ওসমানের বিরোধের কথা বলা হচ্ছে, সেই ওসমানের সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। হামলার কথা শুনে আমি আর ওসমান দুজনে একসঙ্গে হাসপাতালে গিয়েছি।
পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, হামলার কথা শুনার পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। কারা খুন করেছে, কি কারণে এবং কেন খুন করা হয়েছে সবই আমরা তদন্ত করছি। লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।