বিলুপ্ত সংসদের এমপিদের বাসায় হাজার হাজার কোটি টাকা, অভিযান চালানোর দাবি ফারুকের

 নিজস্ব প্রতিবেদক

আপডেট: ২০২৪-০৮-১৮



বিলুপ্ত সংসদের এমপিদের বাসায় হাজার হাজার কোটি টাকা, অভিযান চালানোর দাবি ফারুকের

গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করায় বিলুপ্ত জাতীয় সংসদের এমপিদের বাসায় হাজার হাজার কোটি টাকা রয়েছে বলে মন্তব্য করে অবিলম্বে সেখানে অভিযান পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। 

রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এই দাবি জানান। 

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিপ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, যেসব সংসদ সদস্য অনির্বাচিত, যারা হাজার কোটি টাকা লুট করে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি করেছে, সড়ক-জনপথ বিভাগে দুর্নীতি করেছে, যারা বিচার বিভাগে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ দেয়নি, সে সকল অনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের কিছু আনা-গোনা জনগণ দেখতে পারছে।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, গত ৭ জানুয়ারির ভোটবিহীন ডামি নির্বাচনে ৩শ এমপির বাসায় হাজার কোটি টাকার ডলার পাবেন। তল্লাশি করেন, তদন্ত শুরু করেন, সব বেরিয়ে পড়বে। আপনাকে সহযোগিতা করার জন্য আমরা প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে নির্মমভাবে নিজের নির্যাতিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, জীবনের বিনিময় হলেও ১৬ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আর শিকার হতে চাই না। একটি গণতান্ত্রিক দেশে তারেক রহমানের ভাষায় আমার ভোট আমি দেব, এই অধিকারের ভিত্তিতে একটি নির্বাচন দেশে হোক। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাবে, আর কাউকে রাস্তায় আসতে হবে না।

তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের উদ্যোগে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

তিনি বলেন, ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ মইনুল সড়কে খালেদা জিয়ার জন্য বরাদ্ধকৃত বাড়িতে ভবন নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের নামে হোস্টেল নির্মাণের দাবি জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা বলতে চাই, খালেদা জিয়াকে সরকার বাড়ি দিয়েছিলো ক্যান্টনমেন্টে। সেদিন আমাদেরকে ঢুকতে দেয়নি, ম্যাডামকে খালি হাতে সরকার কর্তৃক বরাদ্ধকৃত বাড়ি থেকে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বের করে দিয়েছিলেন। আজকে বাংলাদেশে এখন জনগণের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনতার দাবি, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটি ১০ তলা ভবন তৈরি করে ঢাকা কলেজের হোস্টেল তৈরি করে আবু সাঈদের নামে নামকরণ করা হোক।  

বিএনপির এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা ইতিহাস পড়ে দেখেননি। তিনি বলেছিলেন, পৃথিবীর কোনো শক্তি নেই তাকে সরাতে পারে। কিন্তু ইতিহাসের নির্মম পরিহাস। আবু সাঈদ, মুগ্ধের রক্তের বিনিময়ে যে আন্দোলন ঢাকার বুকে হয়েছে, সেই আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা চুরি করে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। অহংকার আল্লাহর চোখে শোভা পায় না।

তিনি আরো বলেন, এই আন্দোলনে হত্যাকাণ্ড আপনি (শেখ হাসিনা) করেছেন, হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশ আপনি দিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর গুলির নির্দেশ আপনার কাছ থেকে এসেছে। যারা জীবন দিয়েছে, তারা আজকে আমাদের মাঝে নেই, তাদের রক্তের গন্ধ এখনো শুকায়নি, তাদের আত্মহুতির কথা মানুষ ভুলে নাই। আজকে শেখ হাসিনা কোথায়? আজকে কোথায় সালমান, কোথায় আনিসুল হক? মুখ ব্যাঙিয়ে কথা বলতেন আনিসুল হক, আপনি এখন জেলে আর খালেদা জিয়া মুক্ত আকাশের নিচে। সবই আল্লাহর ইচ্ছা, সবই আল্লাহর রহমত।’

বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতের সহযোগিতা চান বিএনপির এই নেতা।

তৃণমূল নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা মফিজুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে এই অবস্থান কর্মসূচিতে বিএনপির নির্বাহী কমিটির বিলকিস ইসলাম, মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হকসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।