সাজাপ্রাপ্ত ও ডজন মামলার আসামীদেরকে সদস্য করা নিয়ে হট্রগোল

পেকুয়া উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা পন্ড!

 প্রতিনিধি

আপডেট: ২০২৪-০৩-২৫



পেকুয়া উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভা পন্ড!

পেকুয়ায় ২৫মার্চ গণহত্যায় নিহতদের স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলা পরিষদ হল রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চকরিয়া-পেকুয়ার সংসদ সদস্য ও কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ছৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম, বিশেষ অথিতির বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এড. উম্মে কুলছুম মিনু, পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াছ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এড কামাল হোসেন,  উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, ওসি (তদন্ত) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্যসহ অনেকেই ।  
আলোচনা সভা শেষে সকাল ১১টা ৪০মিনিটে শুরু হয় উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্যে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য ছাড়া অন্যদের সভাস্থল ত্যাগ করতে অনুরোধ জানান। পেকুয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ শাহেদ ইকবাল, পেকুয়া মডেল সরকারি জি এম সি ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র  শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী,  আওয়ামীলীগ নেতা নাছির উদ্দীন বাদশা, যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আজম, সৈনিকলীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম হিরু ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জুবাইদুল্লাহ লিটন। অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী জুবাইদুল্লাহকে ও চিহ্নিত ডজন মামলার আসামীকে  প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত করা নিয়ে বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বক্তারা। সাজাপ্রাপ্ত আসামী জুবাইদুলাহ তার বক্তব্যে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ নয় এবং কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি প্রত্যাখান করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম প্রতিবাদ জানায়। এরা বলেন, এটি কোন রাজনৈতিক মঞ্চ নয়, সাংগঠনিক বা দলীয় মিটিং নয়। এটি আইন শৃংখলা কমিটির সভা এখানে কোন ব্যক্তির পদ পরিবর্তনের সুযোগ থাকেনা। এসময় দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয় এবং একপর্যায়ে সভায় বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়। এ সময়  চকরিয়া-পেকুয়ার সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ছৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা না করে পরিবেশ শান্ত রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান। একপর্যায়ে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম দুপুর ১টা ৫ মিনিটের সময় আইন শৃংখলা কমিটির সভা ভয়কট করেন। এরপর পরই সভার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চাই তোয়াইহলা চৌধুরী স্বাক্ষরিত গত মাসের সভার কার্যবিবরণীর ৭নং বিবরণে সাইফুদ্দিন খালেদকে সভাপতি উল্লেখ করা নিয়ে তুমুল বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে সভা পন্ড হয় এবং সদস্যরা সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যাওয়ার সময় নতুন সদস্য কপিল ও আজমের সাথে যাওয়া চিহ্নিত ক্যাডাররা টইটং ইউপি'র চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলামের উপর হামলার চেষ্টা চালায়। এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুদ্দিন খালেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম দ্রুত এগিয়ে গিয়ে আজম ও কপিলের সাথে সভাস্থলে যাওয়া চিহ্নিত ক্যাডারদের হাত থেকে রক্ষা করে বলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এ প্রতিবেদককে জানান।
টইটং ইউপি'র চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম জানান, সভায় হট্রগোল হওয়ায় আমি চলে যাওয়ার সময় কমিটির বিতর্কিত সদস্য আজম, লিটন ও কপিলের ক্যাডাররা আমার উপর হামলার চেষ্টা চালায়। আমি এদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

সংসদ সদস্য ছৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, আইন শৃংখলা কমিটির সভায় যে যে বিষয় নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়েছে তা জেলা আওয়ামীগের উর্ধ্বতন মহলকে অবগত করবো। 

পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, আইন শৃংখলা কমিটির সভার শুরুতে সবার উদ্দেশ্যে বলেছিলাম যে, আইন-শৃংখলা কমিটিতে  কিছু ভূলভ্রান্তি আছে। সবার সাথে বসে আগামীতে তা সংশোধন করা হবে।