আপডেট: ২০২৪-০২-০৭
পাসপোর্ট অফিস এর নাম শুনলেই প্রায় সকলেই এক বাক্যে বলে ওঠেন ভোগান্তির কথা এবং ভোগান্তির শিকার হয় পাসপোর্ট করতে আসা প্রায়ই মানুষ । আর সাথে তো রয়েছে দালালদের দৌরাত্ম্য । দালালদের দৌরাত্ম্য
এতই প্রকট থাকে যেন মনে হয় পাসপোর্ট অফিস পরিচালনা করে দালালরাই। জনমানুষের মনে গেঁথে যাওয়া ভোগান্তির এই ধারণা কে ভুল প্রমাণ করে জনগন কে তড়িৎ গতিতে কাঙ্খিত সেবা প্রদানে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কাজ করে আসছিলেন চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ
আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এর উপ-পরিচালক তারিক সালমান । কিন্তু সর্ষের মধ্যে ভূত থাকলে সেই ভূত তাড়াবে কে যে প্রবাদ বাক্য আছে সেটি কে সত্য প্রমাণিত করে শক্তিশালী দুর্নীতিবাজ ও দালাল সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার কারণে থাকতে পারলেন না তারিক সালমান । তাকে বদলি করা হয়েছে ঢাকার আগারগাঁও এ অবস্থিত প্রধান পাসপোর্ট অফিসে ।
গত ২৮-৯-২০২২ এ পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস এর উপ-পরিচালকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই পাসপোর্ট অফিসের সেবা প্রত্যাশীদের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নও করেছিলেন । যা প্রশংসা কুড়িয়েছিল
সর্বমহলে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল , সকল সেবা প্রত্যাশীদের জন্য উপ-পরিচালকের রুম উমুক্তকরণ, পাসপোর্ট অফিসে দালাল ও অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের প্রবেশ নিষিদ্ধকরণ, সেবা প্রার্থীদের প্রতি আনসারদের দুর্ব্যবহার রোধকরণ, দ্রুত সেবা প্রাপ্তি সহজীকরণ, তথ্য সেবা কেন্দ্র স্থাপন, যে কোন অভিযোগ ও অনিয়ম এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ।
উপ-পরিচালক তারিক সালমানের জনবান্ধব এই ধরনের কার্যক্রম এর কারণে ব্যাপকভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়ে পাসপোর্ট অফিসের চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও দালাল সিন্ডিকেট টি । ফলশ্রুতিতে এই পদ থেকে তারিক সালমানকে সরাতে তারা ব্যাপক তৎপরতা শুরু করে।
বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, এই পদ থেকে তারিক সালমানকে সরাতে ৬ মাস পূর্ব থেকে প্রায় কোটি টাকার মিশন নিয়ে কাজ শুরু করে ঐ সিন্ডিকেটটি । কিন্তু সে সময় বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও জাতীয় নির্বাচনের কারণে তাদের এই মিশন বাস্তবায়িত হতে একটু বেশি সময় লেগে যায় । ঐ সিন্ডিকেটটি পূর্বে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে উপ-পরিচালকের দায়িত্বে থাকা মাছুম হাসান এর সময় কোটি কোটি টাকার অর্থ হাতিয়ে নেই । এই নিয়ে দুদকের গন শুনানিতে সাধারণ মানুষের তোপের মুখে পড়তে হয় মাসুম হাসান কে। যা সেই সময় দেশ ব্যাপী আলোচিত ঘটনা ছিল। এই দুর্নীতিবাজ ও দালাল সিন্ডিকেট এতই শক্তিশালী যে তারা মনসুরাবাদ অফিসেও তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে ।
পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে সেবা গ্রহণকারী চট্টল অধিকার ফোরামের সভাপতি কায়সার আলী চৌধুরী বলেন, " পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসকে নির্ঝঞ্ঝাট, দালাল মুক্ত ও সেবা প্রার্থীদের নিকট সহজবোধ্য করার অন্যতম কারিগর তারিক সালমানের মত একজন দক্ষ অফিসার এর এই ধরনের প্রস্থান সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক । সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টা বিবেচনা নিয়ে দুর্নীতিবাজ ও দালাল সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধ করা " ।
সংশ্লিষ্টদের মতে, যতদিন পর্যন্ত চট্টগ্রামের মনসুরাবাদ ও পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতিবাজ ও দালাল সিন্ডিকেটদের দৌরাত্ম বন্ধ হবে না ততদিন সুদক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি যোগ্য আসনে বসে জনসেবা করতে ব্যর্থ হবে । স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এই ব্যাপারে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে ।
© Copyright https://ctgbulletin.net/
Developed By Muktodhara Technology Limited.