জাবিতে পুরাতন পত্রিকা কেনার আড়ালে মাদক সরবরাহ করতেন শাহিন

 সিটিজি বুলেটিন ডেস্ক

আপডেট: ২০২৪-০৯-০৫



জাবিতে পুরাতন পত্রিকা কেনার আড়ালে মাদক সরবরাহ করতেন শাহিন

গাঁজা সরবরাহের অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হলের এক পুরাতন পত্রিকা ক্রেতাকে আটক করেছেন হলের নিরাপত্তা কর্মীরা। মঙ্গলবার দুপুর ২টায় পুরাতন পত্রিকা নিতে এলে মো. শাহীনকে পূর্বের একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে আটক করেন হলের নিরাপত্তাকর্মীরা। 

অভিযুক্ত শাহীনের (৪০) পিতা মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী গেরুয়া পুরান মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা। তার স্থায়ী ঠিকানা সাভারের রেডিও কলোনি। এর আগে হলের ডাইনিং কর্মচারী মো. নাসিমুল হক বাবু ও অন্যান্য মাদকসেবীদের সঙ্গে নিয়মিত গাঁজা সেবন এবং হলে গাজা সরবরাহের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি গত ফেব্রুয়ারিতে ধর্ষণকাণ্ডের পর তাকে হলে এসে কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেখা গেছে বলে নিশ্চিত করেছে হলের নিরাপত্তা কর্মীরা। 

জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত শাহিন হলের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে কর্মরত কয়েকজন কর্মচারী তার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে। এদের মধ্যে আছেন হলের দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক ডাইনিং কর্মচারী মো. নাসিমুল হক বাবু। তার বাড়ি দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বাজনাহার ইউনিয়নে। তার পিতা মেহের আলীর টারজান পয়েন্টে চায়ের দোকান আছে।  

ডাইনিং কর্মচারী বাবু বলেন, কিছুদিন আগে শাহিনের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তাকে বললাম, সারাদিন (গাঁজা) খাইতে পারি নাই। চলো খেয়ে আসি। হলের ডাইনিংয়ের পেছনে এক জায়গায় আমরা দুইজনে বসে (গাঁজা) খাই। আমি গেরুয়া থেকে নিয়ে আসছিলাম। তবে আমি এখন খাই না। এর আগে হল প্রভোস্টের ফাঁকা বাসভবনে যন্ত্রপাতি চুরির ঘটনায় বাবুসহ কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। 

প্রশাসনিক কর্মকর্তা শামসুল আলম বলেন, ৬ মাস আগে হলের স্টাফদের সঙ্গে গাঁজা সেবন ও হলে গাঁজা সরবরাহের অভিযোগ পেলে তাকে বারবার ফোন দিয়ে হল অফিসে দেখা করার জন্য বলা হয়েছে কিন্তু কোনোভাবেই সে দেখা করেনি। আজ সে পত্রিকা নিতে এলে হলের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে আটক করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করে। শাহিনকে নিরাপত্তা অফিসে দেওয়া হবে।

এছাড়া হলের সন্দেহভাজন কর্মচারীদের ডোপ টেস্টের মাধ্যমে মাদক সংশ্লিষ্টতা যাচাই করা হবে বলে জানান তিনি। 

এ সময় অভিযুক্ত শাহীন বলেন, আমি আগে নিয়মিত গাঁজা খাইতাম। এখন সব ছেড়ে দিয়েছি। হলের স্টাফের সঙ্গে হলে গাঁজা খেয়েছি এটা সত্য কিন্তু এখন আর আমি এসবে নাই।

এ সময় জিজ্ঞাসাবাদে হল ও আশপাশে কারা মাদক সরবরাহ করে জানতে চাইলে শাহীন বলেন, পার্শ্ববর্তী এলাকা গেরুয়াতে মাদক সরবরাহ করে খান সাহেব ও পাঞ্চু। এদের মধ্যে বটতলায় দোকানে কাজ করে লেকু। লেকুর বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী। 

এ ব্যাপারে হলের ওয়ার্ডেন অধ্যাপক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, মাদকের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। চুনোপুঁটি থেকে শুরু করে রাঘব বোয়াল সবাইকেই আমরা ধরার চেষ্টা করছি। ইনশাআল্লাহ খুব শিগগিরই আমরা আমাদের হলসহ বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকমুক্ত করব।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার গাঁজা সরবরাহের সময় হাতেনাতে হলের ক্যান্টিন বয় আসিফ ও ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী শিহাদকে আটক করে হলের নিরাপত্তা কর্মীরা। এ ঘটনায় হলের একটি ক্যান্টিন বন্ধ করে দিয়েছে হল প্রশাসন। এছাড়া অভিযুক্ত শিহাদকে কারণ দর্শানো নোটিশ ও অন্যদের লিখিতভাবে সতর্ক করা হয়েছে।