আপডেট: ২০২৪-০৯-০৪
সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আরেক সমন্বয়ক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা পদত্যাগ করেছেন।
শনিবার রাত সাড়ে ৮টায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পদত্যাগের এ ঘোষণা দেন। ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস ও জবি থেকে উপাচার্য নিয়োগসহ শিক্ষার্থীদের সকল দাবি পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলেও বিবৃতিতে আশ্বস্ত করেন তিনি।
বিবৃতিতে বলেন, আমি সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকব এটা কথা দিচ্ছি। জবির সংস্কারে ‘জবি সংস্কার আন্দোলন’ নামে যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, এখানে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে সর্বদা পাশে থাকব। প্রিয় জবিকে সংস্কার করেই ঘরে ফিরতে চাই।
মানুদ রানা বলেন, বর্তমানে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যকারিতা দেখছি না। সমন্বয়ক নাম ভাঙিয়ে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে হল দখলদারিত্বের অভিযোগ উঠছে, চাঁদাবাজির অভিযোগও উঠছে এদের বিরুদ্ধে। সবকিছু বিবেচনা করে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করছি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমি মাসুদ রানা। ২০২৪-এর কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে শুরু থেকেই সকল আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে এসেছি। সরকারি চাকরিতে কোটা নামক বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সূত্রপাত হয় এ বছরের জুন মাসে এবং এই আন্দোলন জুলাইয়ের শুরু থেকে ক্রমান্বয়ে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় জবির লাইব্রেরিতে পড়ুয়াদের হাত ধরে এই আন্দোলনের সূচনা হয়। আমিও এতে সরাসরি অংশগ্রহণ করি। সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান করে সিনিয়র-জুনিয়র সবার সঙ্গে আলোচনা করে আন্দোলন যেন গতি পায়, সেই কাজ করেছি। তারপর থেকে একটা প্রোগ্রামও আমি মিস দেয়নি। এমনকি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে প্রোগ্রামগুলোতে উপস্থিতি বাড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
মাসুদ আরও বলেন, যারা নিয়মিত আন্দোলনে ছিলেন, তারাই জানেন আমি কি অবদান রেখেছি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯ জুলাই কারফিউ চলাকালীন আমি আর নূর নবী দুজন মিলে ক্যাম্পাসের গেটের সামনে থেকে পুলিশকে সরিয়ে আমরা প্রোগ্রাম করতে চাইলে পুলিশ নূর নবীকে গ্রেফতার করে। আমরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লেও আবার কবি নজরুল সরকারি কলেজের গেটের সামনে একত্রিত হয়ে স্লোগান দিতে থাকি। শুরু হয় পুলিশের গুলিবর্ষণ। আবারও সবাই ছড়িয়ে পড়ি। লক্ষ্মীবাজারে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সেদিন পুলিশকে রুখে দিতে হাজারও মানুষ লড়াই করি। আছরের নামাজের পর পুলিশ সরাসরি গুলি করে। সেখানে আমাদের কয়েকজন ভাই শাহাদাতবরণ করেন। সেদিন শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকার চেষ্টা করেছি। শেখ হাসিনার নির্দেশে সারা দেশে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয় ছাত্রসমাজসহ জনসাধারণকে। পরবর্তীতে খুনি হাসিনাকে ছাত্রসমাজ ৯ দফা দাবি উত্থাপন করে। কিন্তু সেটা না মানলে শুরু হয় একদফা। মানুষ দলে দলে রাজপথে বেরিয়ে আসে। কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা ৫ আগস্ট ঢাকা ঘেরাও কর্মসূচি দিলে হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। শুরু হয় নতুন বাংলাদেশের সূচনা। গঠিত হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যারা এখনো ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় বেশ সফলতার সঙ্গে দেশ পরিচালনা করছে।
© Copyright https://ctgbulletin.net/
Developed By Muktodhara Technology Limited.